উপজেলার হাট-বাজার গুলোতে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বাড়ায় জনসাধারণ নিত্যদিনের কাজকর্মে পথ চলাচলে সংকিত হয়ে পড়েছে।
ভাদ্র-আশ্বিন মাস কুকুর ও বিড়ালের প্রজননের মৌসুম। যে কারণে নানাবর্ণের বড়-ছোট বেওয়ারিশ কুকুরের উম্মুক্ত চলাচল সহ উপদ্রব বেড়েছে। কুকুরগুলো সড়কের উপর জটলা করে চলাচল করে এছাড়াও জনসাধারণকে আক্রমণ করার জন্য ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে আসছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও ব্যাটারী চালিত ভ্যান, স্কুল-কলেজ গামী শিশু কিশোররা এ বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমন সহ দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। গ্রামের লোকজন জানান বেওয়ারিশ কুকুরগুলো বাসা বাড়ির হাঁস মুরগী সহ মাঠে বাঁধে রাখা ছাগলগুলো নেকড়ে বাঘের মত ধরে খেয়ে ফেলছে। কুকুর নিধনের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ প্রশাসনকে জানিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না।
এদিকে তেঁতুলিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারিভাবে কুকুর কামড়ানোর কোন ভ্যাকসিন সরবরাহ নাই। তবে হাসপাতালের ইপিআই কার্যক্রমের সংগে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকর্মী জানান- ২০১৯ সালে বিড়াল ও কুকুর কামড়ে আক্রান্ত ২৭ জন রোগী এবং ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৮ জন আক্রান্ত ব্যাক্তি ভ্যাকসিন অন্যত্র থেকে কিনে সেবা নিয়েছে। কুকুর ও বিড়াল কামড়ানো আক্রান্ত রোগীরা শুধুমাত্র পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে সরকারিভাবে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পেয়ে থাকে। পঞ্চগড় হাসপাতালের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুয়ায়ী ২০১৯ সালের বিড়াল, কুকুর ও অন্যান্য প্রাণির কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৩ জন। ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে আগষ্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৬শত ৪৪ জন। তদ্মধ্যে শুধু কুকুর কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪শত ৩৯ জন।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কুকুর ও বিড়াল সহ অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা বিনামুল্যে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকনিক না পাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সরকারিভাবে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন উপজেলা হাসপাতালে সরবরাহ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আশুদৃষ্টি কামনা করছেন সর্বস্তরের জনগণ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, কোন প্রাণিকে নিধনের বিষয়ে বিদ্যমান কোন আইন নেই তবে গৃহপালিত কুকুর ও বিড়াল যারা পোষেণ তাদের উচিৎ প্রাণীগুলোকে উম্মুক্ত ছেড়ে না দেয়া। এক্ষেত্রে জনসাধারণের জন্য হুমকী ও ক্ষতিকারক এমন হিং¯্র প্রাণির উপদ্রব হলে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের সহযোগীতায় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
সিভিল সার্জন মো. ফজলুর রহমান জানান, সরকারের রুল অব পলিসি অনুযায়ী দেশের জেলা ও বিভাগীয় শহরে অবস্থিত হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত রোগীর ভ্যাকসিন বিনামূলে সরবরাহ করা হয়। সে কারণে উপজেলা হাসপাতালে এসব ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয় না।
বার্তা প্রেরক
জাবেদুর রহমান জাবেদ
তেতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি