বিভিন্ন শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে রাখাইনদের কথা উল্লেখ আছে। বাংলাদেশে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি রাখাইন। পালি ‘আরাখা’ (রক্ষ, রক্ষিতা, রক্ষক) শব্দ থেকে রাখাইন শব্দটির উৎপত্তি। আর্য বংশোদ্ভূত রাখাইনদের প্রাচীন বাসস্থান ছিল মগধ রাজ্য। পরে মগধ থেকে আরাকানে এসে বসতি স্থাপন করে। পরিচিতি পায় মগধী বা মগ নামে। আঠারো শতকের শেষ দিকে এদের অনেকেই আরাকান থেকে বাংলাদেশে এসে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে বসতি গাড়ে। বর্তমানে বেশির ভাগ রাখাইনের বসবাস কক্সবাজার, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায়। এ ছাড়া রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায়ও কিছু রাখাইন বাস করে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়ও রাখাইন সম্প্রদায়ের বসতি রয়েছে। শিল্পকলা ও নান্দনিক সংস্কৃতি রাখাইনদের প্রাচীন ঐতিহ্য। বিশেষ করে স্থাপত্যকলা, চারু ও কারুকলা, চিত্রকলা, ভাস্কর্য শিল্প, সংগীত, নাট্য ও নৃত্যকলায় তাদের দখল রয়েছে। রাখাইনদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নৃত্যের প্রচলন আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রদীপনৃত্য, শিশুনৃত্য, পুষ্পনৃত্য, রথনৃত্য, জলকেলিনৃত্য, ছাতানৃত্য, পাখানৃত্য ও রাখালনৃত্য। রাখাইনরা কৃষি চাষ ও মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, নৌকা তৈরি ও তাঁত বুনন এদের অন্যতম পেশা। স্বর্ণকার, কামার, রাজমিস্ত্রি, চিত্রকর ও ধাতব মিস্ত্রির কাজের সঙ্গেও তারা জড়িত।