মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পেছনে কর্মকর্তাদের তদারকির গাফিলতির সুযোগে নি¤œ মানের সামগ্রী দিয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণের একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে ভবনটি দ্রæত ব্যবহার করতে গেলে এর কার্যকারিতা হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভবনটিতে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে রাজমিস্ত্রীরা তিন বলায় ইটের গাঁথুনি দিয়ে তৈরী করছে; কিন্তু গাঁথুনিতে ব্যবহার করছে যে ইট সেটা খুবই নি¤œ মানের। যার স্থায়ীত্ব অনেক কম বলা যেতে পারে। এছাড়া বালুর সাথে সিমেন্টের মিশ্রণের মধ্যেও ঘাটতিও রয়েছে।
নির্মাণ শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পটির নির্মাণকালীন সময়ে তদারকি কর্মকর্তারা তেমন কাউকে দেখা যায় নি। একজন ইঞ্চিনিয়ার ও মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে কাজের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা ঠিক মত এখানে আসেন না বলেও এমন অভিযোগ রয়েছে। কর্মকর্তারা তদারকিতে গাফিলতি কারণে নিজেদের ইচ্ছেমত নি¤œ মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করছে।
মাদারীপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও রেকর্ড রুমের দক্ষিণ দিকের খোলা মাঠে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মাদারীপুর জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্রের তিনতলা ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ভবনটি নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নেত্রকোনার মেসার্স হাফিজ এন্ড ব্রাদার্স। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের একজন স্থানীয় প্রতিনিধি জেলা আওয়ামীলীগের নেতা আরিফুর রহমান। তিনিই ভবনটির মূলত স্থানীয় ঠিকাদার। ২০১৯ সালের ৪ আগষ্ট ভবনটি নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং যার বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৩ আগষ্ট পর্যন্ত কিন্তু এখনো ভবনের নির্মাণ কাজ অনেক বাকী রয়ে গেছে।
এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ঠিকাদার আরিফুর রহমান বলেন, বর্তমানে ইটভাটায় যেই ইট পাওয়া যায় সেই ইট দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। নিম্মমানের ইট নয়। কাজে কোন অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এই বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, আমরা প্রকল্প কাজের ওখানে ঠিক মত যাই না এটা ঠিক না। তবে জনবল সংকটের কারণে সব সময় যাওয়া হয় না। ভবন নির্মাণে যদি নি¤œ মানের ইট ও কম সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে; তাহলে আমরা ওই ইট ব্যবহার করতে দেব না।
এবিষয় মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, আমি ভবনটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে যাব। যদি ভবন নির্মাণে মান খারাপ পাই তাহলে তা কাজ করতে দেওয়া হবে না।
বার্তা প্রেরক
মাসুদ রেজা ফিরোজী
মাদারীপুর প্রতিনিধি