হাত-পাঁ বেধে এরপরে ঘরের মধ্যে নিয়ে লোহার পাইপ দিয়ে বেদম পিটানো দিয়ে, এক পর্যায়ে বুঁকের উপর উঠে নির্মম নির্যাতন করে টাকা আর মোবাইল চুরির অভিযোগে আসিক চৌকিদার নামে এক স্কুলছাত্রকে। এমন শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন মাদারীপুরের ডাসারে রেজাউল করিম ভাষাই নামে এক ব্যক্তি। ওই স্কুলছাত্রকে গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এতে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে।
এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর বিচার দাবি করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ডাসার এলাকার কমলাপুর বাজারে কালাই শিকদারের হার্ডওয়ারের দোকানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগদ টাকা আর মোবাইল চুরি হলে এ ঘটনার অভিযোগে পূর্ব কমলাপুর গ্রামের হিমজাল চোকিদারের দশম শ্রেণীতে পড়–য়া ছেলে আসিক চৌকিদারকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় ডাসারের ব্যবসায়ী রেজাউল করিম ভাষাই। এক পর্যায়ে ভাষাইয়ের নেতৃত্বে ৫ থেকে ৬ জন মিলে আসিককে দড়ি দিয়ে বেঁধে লোহার পাইপ দিয়ে বেদম পিটানোর পরে এক পর্যায়ে তার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করে। এসময়ে বুঁকের উপর উঠে লাথি-ঘুষি দিয়ে থাকে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানেও ভাষাইয়ের লোকজন চিকিৎসা নিতে বাঁধা দেয়। শনিবার রাতে বিষয়টি একব্যক্তি ফেসবুকে দিলে সমালোচনার ঝড় উঠে। বতর্মানে আসিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দোষীদের শাস্তির দাবি করেন ভূক্তিভোগি পরিবার।
নির্যাতনের শিকার কিশোর আসিক চৌকিদার বলেন, আমাকে বেদম মারধর করেছে। আমরা গরীব বলে কি এর বিচার পাবো না? আমি এর বিচার চাই। নির্যাতনের শিকার কিশোরের মা মুনিরা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করেছে। এখন শালিস মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছে। এর আগে হাসপাতালে নিতেও বাধা দিয়েছে ভাষাই ও তার লোকজন। আমরা এর বিচার চাই। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সদর হাসপাতালে গিয়ে শিশুটি খোঁজ খবর নেয়েছেন। মাদারীপুুরের মানবাধীকার কর্মী সুবল বিশ্বাস বলেন, আইন কারো হাতে তুলে নেয়ার সুযোগ নেই। ছেলেটিকে নির্যাতন করা মোটেও ঠিক হয়নি। আমরা দোষীদের কঠোর বিচার দাবি করছি। পুলিশরে উচিত দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করা।
গ্রেফতার না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, শুনেছি এখনও মামলা হয়নি, এটা খুবই দুঃখজনক। মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করা আইনত গর্হিত অপরাধ। নির্যাতনের শিকার কিশোরের পরিবার থেকে মামলা করা হলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে। ঘটনা জানাজানি হলে পুরো পরিবারের লোকজন এখন আত্মগোপনে আছে। তবে রেজাউল করিম ভাষাই মোবাইল ফোনে দাবি, চোরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
বার্তা প্রেরক
মাসুদ রেজা ফিরোজী
মাদারীপুর প্রতিনিধি